পানির দাবি জাতিসংঘে নেওয়ার আহ্বান বিএনপির
আবুল বাশার:
ভারতের সঙ্গে তিস্তাসহ ৫৮টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার বিষয়টি জাতিসংঘে উত্থাপনে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
বুধবার জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই আহ্বান জানান।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ভারতের সাথে অমীমাংসিত তিস্তাসহ ৫৮টি নদীর পানির ন্যায্য হিৎসার বিষয়টি জাতিসংঘে উত্থাপন করতে হবে। আমরা খুব পরিস্কারভাবে বলতে চাই, আমরা যে আন্দোলন করছি, এই আন্দোলন কোনো নেত্রীর জন্য নয়, কোনো দলের জন্য নয়, এটা দেশের মানুষের অধিকার পাওয়ার আন্দোলন। এটা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলন। আসুন আমাদের ন্যায্য পাওয়া আদায়ের জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ হই, সকল দল, ব্যক্তি সংগঠনকে আবার জাতীয় ঐক্যের ডাক দিচ্ছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা (সরকার) পানি আনতে ব্যর্থ হয়েছেন, জনগণের যে দাবি তা আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা আহবান জানাচ্ছি, অবিলম্বে তিস্তা নদীর পানিসহ ৫৮টি অভিন্ন নদীর পানি হিৎসা পাওয়ার বিষয়টি জাতিসংঘে তুলে ধরুন। জাতিসংঘকে এটার মধ্যে সংযুক্ত করে এই সমস্যা সমাধানে তাদেরকে সম্পৃক্ত করুন। পানির ন্যায্যা হিৎসার দাবিতে জাতীয় ঐক্যের আহবান জানিয়ে
ফখরুল বলেন, আমাদের দাবি, প্রত্যেকটি নদীর ন্যায্য হিৎসা আমাদের দিতে হবে। আমরা কোনো দয়া চাইছি না। আমাদের যেটা আইনগতভাবে পাওনা, আমরা সেই পানির ন্যায্য হিৎসা চাই। এই সরকার দেশের স্বার্থে কেনো ব্যর্থ হচ্ছে ? ব্যর্থতার একটি কারণ, তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত না, জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে, জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। সেজন্যই যারা তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করছে, তাদের কাছে তারা নিজের জনগণেরর দাবি-দাওয়াগুলো সেভাবে তারা পেশ করতে পারছেন না, আদায়ও করতে পারছেন না।
‘নতজানু’ পররাষ্ট্র নীতির কারণেই সরকার ভারতের কাছ থেকে ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ‘দর কাষাকষি’ করতে পারছে না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
বৃষ্টি এবং উজানের ঢলে হাওর অঞ্চলে বন্যার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “কয়েকদিন আগে আমি নেত্রকোণা গিয়েছিলাম। উজান থেকে পানি এসে হাওর এলাকার ১০ লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করে দিয়েছে। মানুষ হাহাকার করছে, কোটি কোটি মানুষ দুর্গত হয়েছে।”
“এর একমাত্র কারণ হচ্ছে, যেহেতু আমাদের কোনো চুক্তি নেই, তাদের যখন বন্যা হয়, তখন ভারত তার অঞ্চলের বাঁধগুলো খুলে দেয়, আমরা পানিতে তলিয়ে যাই।”
সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, “আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। আজকে গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্রকে হরণ করা হয়েছে। আজকে দেশের মানুষ একটা কারাগারের মধ্যে পড়ে গেছে। সেই কারাগার থেকে অবশ্যই আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
“সরকারের মধ্যে শুভ বুদ্ধির উদয় হোক, আপনারা নির্বাচন দিন। সেই নির্বাচন হতে হবে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে এবং একই সঙ্গে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে।”
মুক্তিযোদ্ধা দলের সহসভাপতি আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের পরিচালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল জয়নাল আবেদীন, মহিলাদলের নেত্রী শিরিন সুলতানা এবং স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলনের সভাপতি ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনিরসহ মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাই